প্রকাশিত: Tue, Jun 20, 2023 9:55 PM
আপডেট: Fri, Jun 13, 2025 11:14 AM

যুক্তরাষ্ট্রে ৩ দিনের সফরে নরেন্দ্র মোদি কূটনৈতিক মহলে নানান জল্পনা-কল্পনা

ইমরুল শাহেদ: মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমন্ত্রণে নরেন্দ্র মোদি মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র সফরে গেছেন। ভারত-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়নে মোদির এই সফর বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এই সফরের মাধ্যমে দু’দেশের কৌশলগত সামরিক বোঝাপড়ার ভিত আরও মজবুত হবে, এমনটাই মনে করা হচ্ছে। সফরে প্রতিরক্ষা বিষয়ে বেশ কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ বিষয়ে গণমাধ্যমের কাছে কিছুটা আলোকপাত করেছেন পররাষ্ট্রসচিব বিনয়মোহন কোয়াত্রা।  

২০১৪ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর যুক্তরাষ্ট্রে তার প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরে যাওয়ার আগে মঙ্গলবার টুইটারে পোস্ট দিয়ে মোদি বলেছেন, আমরা বাণিজ্য, উদ্ভাবন, প্রযুক্তি এবং এই জাতীয় অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ভারত-মার্কিন সম্পর্ক আরও গভীর করতে চাই। যুক্তরাষ্ট্রও চীনের পাল্টা আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে ভারতকে পাশে চায়। সূত্র: আল-জাজিরা 

আনন্দবাজার অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদনে পারস্পরিক সহযোগিতা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফরের প্রধান আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠতে চলেছে। জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে মোদির সঙ্গে এই প্রথমবার দ্বিপাক্ষিক ক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গ আলোচনা হতে চলেছে। 

কোয়াত্রা জানিয়েছেন, দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে বৈঠকে গুরুত্ব পাবে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরি ও বিকাশে দু’দেশের সহযোগিতা। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের পাশাপাশি শিল্প ও বাণিজ্যে সহযোগিতা বাড়ানো নিয়েও কথা বলবেন মোদি-বাইডেন। টেলিকম, মহাকাশ গবেষণায় বিনিয়োগ নিয়েও তারা আলোচনা করবেন। এছাড়া জেট ইঞ্জিন নিয়েও চুক্তি হওয়ার কথা রয়েছে। জেনারেল ইলেকট্রিক (জিই) ও হিন্দুস্তান অ্যারোনেটিকস লিমিটেডের (হ্যাল) মধ্যে জেট ইঞ্জিন চুক্তি হলে ভারতে জিই-এফ৪১৪ জেট ইঞ্জিন তৈরি করবে জিই। তাদের সহযোগী হবে হ্যাল। এই ইঞ্জিন মার্কিন নৌবাহিনীর এফ/এ১৮ হরনেট বিমানে ব্যবহার করা হয়। মার্কিন নৌবাহিনীর এই যুদ্ধবিমানের ইঞ্জিন-প্রযুক্তি আগে কোনো দেশকে দেওয়া হয়নি।

উল্লেখ করার বিষয় হলো, প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর জো বাইডেন এর আগে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক ইওলকে রাষ্ট্রীয় সফরে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন এবং হোয়াইট হাউসে ডিনারের ব্যবস্থা করেছিলেন। এবার তৃতীয় রাষ্ট্রনেতা হিসাবে নরেন্দ্র মোদি সেই সুযোগ পাচ্ছেন। এই নিয়ে ছয় বার যুক্তরাষ্ট্র সফর করছেন মোদি।

নিউ ইয়র্ক থেকে মোদির সফর শুরু হচ্ছে। ২১ জুন আন্তর্জাতিক যোগ দিবসে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে যোগ দিবসের অনুষ্ঠানের নেতৃত্ব দেবেন মোদি। এরপর তিনি ওয়াশিংটনে পৌঁছুবেন। ২২ জুন হোয়াইট হাউসে বাইডেনের সঙ্গে বৈঠক। সেই দিনই মোদির সম্মানে নৈশভোজের আয়োজন করছেন জো বাইডেন ও তার স্ত্রী জিল বাইজেন। ২২ তারিখেই যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে কথা বলবেন ভারতীয় এই প্রধানমন্ত্রী। এর আগে উইনস্টন চার্চিল ও নেলসন ম্যান্ডেলা ছাড়া আর কেউ এই সম্মান পাননি। পরের দিন মোদির সম্মানে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। যুক্তরাষ্ট্র সফরে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের কর্তাদের সঙ্গেও আলোচনা করবেন মোদি।

ভারতে ২০২৪ সালের নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এই সফরকে ঘিরে কূটনৈতিক মহলে বেশ কৌতুহল সৃষ্টি হয়েছে। তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে আলোচনায় কোন কোন এজেন্ডা উত্থাপন করবেন, আর বাইডেন কীসে গুরুত্ব দেবেন, সেদিকেই সকলের দৃষ্টি নিবদ্ধ। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব